মানুষের রক্তচাপের মাত্রা স্বাভাবিক অবস্থা থেকে যখন বেড়ে যায় তখন তাকে উচ্চ রক্তচাপ বা হাই ব্লাড প্রেসার বলা হয়। হাই ব্লাড প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপ হচ্ছে সারা বিশ্বজুড়ে একটি নিরব ঘাতক নামে পরিচিত। অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও বিপুল সংখ্যক মানুষ হাই ব্লাড প্রেসারে ভুগে থাকেন।
হাই প্রেসার কেনো হয়ঃ
সাধারণত অতিরিক্ত শারীরিক ওজন, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, সঠিক খাদ্যাভ্যাসের অভাবে অনেকেই খুব কম বয়সে উচ্চ রক্তচাপজনিত রোগের শিকার হন। আমাদের শরীরের সবকিছুই নির্ভর করে খাবারের উপর। তাই সবারই স্বাস্থ্যকর ডায়েট প্লান মেনে চলা উচিত। খাবারের অনিয়মের কারনেই মানুষ বেশিরভাগ সময় অনেক রোগে আক্রান্ত হয়। আর প্রেসার যদি বেশি হয় তাহলে আমাদের কিডনির সমস্যা, হার্টের সমস্যাসহ আরো অনেক সমস্যা দেখা দেয়। তাই সবসময় প্রেসার নিয়ন্ত্রনে রাখা উচিত।হাই ব্লাড প্রেসারের কিছু লক্ষনঃ
প্রেসার বেড়ে গেলে তীব্র মাথা ব্যথা, বুকে ব্যথা ,শ্বাস নিতে অসুবিধা হওয়া, হঠাৎ শরীর অসাড় হয়ে যাওয়া, অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যাও দেখা দেয়। অনেকের ক্ষেত্রে আবার নাক দিয়ে রক্ত পড়া । প্রসাবের সাথে রক্ত যাওয়ার মত সমস্যাও দেখা দেয়। তবে কারো কারো ক্ষেত্রে হাই প্রেসারের কোনো সমস্যাই দেখা যায়না। হাই প্রেসারের কারনে অনেক বড় ধরনের সমস্যাও হতে পারে। তাই অবহেলা না করে সবাইকে সতর্ক হওয়া উচিত।হাই ব্লাড প্রেসার কমানোর উপায়ঃ
হাই প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপ কমানোর জন্য অনেকেই ওষুধ সেবন করে থাকেন। কিন্তু ওষুধ খাওয়ার থেকে যদি আমরা কিছু নিয়ম মেনে চলি এবং স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহন করি তাহলে প্রেসার নিয়ন্ত্রনে রাখা সম্ভব। চলুন হাই ব্লাড প্রেসার কমানোর উপায়গুলো দেখে নেয়া যাক-- হাই প্রেসার কমানোর উপায় বলতে গেলে প্রথমেই বলতে হবে একটা স্বাস্থ্যকর ডায়েট। স্বাস্থ্যকর ডায়েট মেনে চললে প্রেসার নিয়ন্ত্রনে রাখা যায়।
- প্রতিদিন নিয়মিত শরীরচর্চা করা বা ব্যায়াম করা উচিত। এতে করে মানসিক চাপ ও ক্লান্তি দূর হয়। এর ফলে প্রেসার নিয়ন্ত্রনে থাকে।
- ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এটা আমরা সবাই জানি তাই প্রেসার নিয়ন্ত্রনে রাখতে হলে ধূমপান বাদ দিতে হবে। কারো যদি অ্যালকোহল পানের অভ্যাস থাকে তাহলে তা বাদ দিতে হবে, একেবারে বাদ দিতে না পারলে অ্যালকোহল পান করা কমিয়ে দিতে হবে।
- প্রতিদিনের খাবারে ফল এবং সবজি বেশি খেতে হবে।
- যদি আপনার উচ্চতা অনুযায়ী ওজন বেশি হয়ে থাকে তাহলে ওজন কমাতে হবে। অতিরিক্ত ওজন প্রেসার সহ আরো অনেক সমস্যা সৃষ্টি করে।
- কাঁচা আদা এবং কাঁচা রসুন দুইটাই প্রেসার কমাতে সাহায্য করে কারন এগুলো শরীরের কোলেস্টরেল কমায়।
- প্রচুর পটাশিয়াম রয়েছে এমন খাবার খেলেও রক্তচাপ কমতে পারে। কারন পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার ফলে প্রসাবের সাথে লবন বেরিয়ে যায়। এতে করে রক্তচাপ কমে। তাই হাইপারটেনশনে ভুগলে পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন, যেমন- বিনস, পালংশাক, কিসমিস ও কলা।
- এছাড়াও ডালিম, আপেল, টমেটো, আঙ্গুর, গাজর, ক্যাপসিকাম, ডাবের পানি, পিয়াজ, নিম ও তুলসী পাতা এসব খাবার হাই প্রেসার কমাতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।